মেহেদী হাসান মুরাদ
এডমিন, এমকে নিউজ |
শঠিবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনাবাহিনী যে দুইজন ‘চেন মাস্টার’কে গ্রেফতার করেছে, তা নিয়ে স্থানীয় মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী, যাত্রী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় নাগরিকরা বলছেন—এই দুইজন প্রকৃত চাঁদাবাজ নয়, বরং বহু বছর ধরে খেটে খাওয়া নিরীহ শ্রমিক, যাঁরা ‘চেন মাস্টার’ হিসেবে মানুষের উপকারেই কাজ করে আসছিলেন।
ঘটনার পরপরই ‘আমাদের মিঠাপুকুর’ ও ‘এমকে নিউজ’-এর পোস্টে শতাধিক কমেন্টে মানুষ তাঁদের নির্দোষ বলেই মন্তব্য করেছেন। মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৯৫% মানুষই বলেছেন—এই দুইজন জোর করে টাকা আদায় করতেন না, বরং যাত্রীর সহায়তায় কাজ করতেন, কেউ স্বেচ্ছায় কিছু টাকা দিতেন। তাঁরা সিন্ডিকেটের সদস্য নন, কাউকে হয়রানি করতেন না।
একজন মন্তব্যে লেখেন—
“এই মানুষগুলা দীর্ঘ দিন ধরে চেন মাস্টারী করে। কখনো চাঁদাবাজ মনে হয়নি। বরং কিছু যাত্রী তুলে দিয়ে টাকা নেন তারা। এনাদের চেয়ে বড় রাঘব বোয়ালকে চোখে দেখবে না, বরং চাঁদাবাজ বানিয়ে দিলো এই সাধারণ মানুষ দুজনকে।”
আরেকজন বলেন—
“তারা তো নিরীহ শ্রমিক, চেন মাস্টার নামে পরিচিত। গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি।”
এমনকি একজনের শারীরিক অবস্থার কথাও উঠে এসেছে—একটি দুর্ঘটনায় তাঁর পা প্রায় পঙ্গু হয়ে যায়। চিকিৎসা চালাতে জমিও বিক্রি করেন। এখন এই সামান্য কাজই তাঁর জীবিকার ভরসা। এমন একজন মানুষকে চাঁদাবাজ বলা এলাকাবাসীর চোখে অমানবিক ও অন্যায়।
এই দুই ব্যক্তির গ্রেফতারের বিষয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে—বাসস্ট্যান্ডের প্রকৃত চাঁদাবাজ কারা? যারা ঈদের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে, তারাই তো আসল সিন্ডিকেট। অথচ নিরীহ শ্রমজীবীদের টার্গেট করা হলো!
বাস মালিক সমিতির কোনো লিখিত বক্তব্য পাওয়া না গেলেও জানা যায়, বহুদিন ধরে এদের মৌখিকভাবে কাজ করার অনুমতি ছিল। তাঁদের কার্যক্রমও বাস মালিক ও হেলপারদের জানাজানির মধ্যেই ছিল।
ঘটনার পর গতকাল, রবিবার ৬ এপ্রিল ২০২৫, বিজ্ঞ আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের এই সিদ্ধান্ত অনেক কিছুই স্পষ্ট করে দেয়—এই গ্রেফতার হয়তো ভ্রান্ত তথ্য বা বিভ্রান্তি থেকে ঘটেছে। কারণ যদি চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য ও প্রমাণিত হতো, তাহলে এত দ্রুত জামিন পাওয়া সম্ভব হতো না।
আমার দাবি স্পষ্ট:
এই দুইজন যদি সত্যিকারের অপরাধী হতেন, তাহলে এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া আসতো না। বরং এই ঘটনায় মনে হচ্ছে—চাঁদাবাজ ধরতে গিয়ে সেনাবাহিনী ভুল মানুষদের শিকার বানিয়ে ফেলেছে।
আমি একজন এলাকাবাসী, সাংবাদিক এবং মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।
শঠিবাড়ীর মানুষ এ অন্যায় মেনে নেবে না।
Leave a Reply