পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগা ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে একটি পারিবারিক ঘটনা ঘিরে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রশ্ন তুলছেন—এভাবে কি সমাজ চলতে পারে? কিছু অসাধু ব্যক্তির ছত্রছায়ায় নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ কি বারবার হেরে যাবে?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মথুরাপুর গ্রামের আঃ রউফ এর পুত্র কাওছার আলম (২২) প্রায় এক বছর আগে মিঠাপুকুর উপজেলার পাগলার বাজারের জনৈক মশিউর মিয়ার মেয়েকে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক রেজিস্ট্রি করে বিবাহ করেন এবং তাদের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্কও বিদ্যমান ছিল।
তবে সম্প্রতি একই গ্রামের স্বামী পরিত্যক্ত মোফাজ্জল হোসেন মফার কন্যা ছবি বেগম (২০)-এর সঙ্গে কাওছার আলমের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কাওছারের স্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর কাওছার তাকে ফিরিয়ে আনতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মোটরসাইকেলসহ আটকে রাখে। পরে সে কৌশলে ফিরে আসে।
ঘটনাটি আরও জটিল হয় যখন কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে ছবি বেগম কাওছারের বাড়িতে গিয়ে ‘স্ত্রীর দাবি’ নিয়ে উঠেন। এলাকাবাসী এবং সমাজপতিরা বিষয়টির আইনি প্রমাণ চাইলে, তারা একটি সাদা কাগজে দুইজনের নাম ও স্বাক্ষরযুক্ত একটি পাতা উপস্থাপন করেন, যা পরবর্তীতে ভূয়া ও জাল দলিল হিসেবে প্রমাণিত হয়।
এলাকাবাসীর চাপে পরে আবারো নতুন করে বিয়ে রেজিস্ট্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে ৮-১০ দিন পার হয়ে গেলেও সুনির্দিষ্ট কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। ইসলামি শরীয়াহ ও আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রি ব্যতীত দাম্পত্য সম্পর্ক অবৈধ হওয়ায় এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
এরই মধ্যে গত ৬ এপ্রিল রাতে, কাওছারের বাড়িতে কিছু টাউট ব্যক্তির উপস্থিতিতে দুই পক্ষের অভিভাবকগণ প্রায় এক লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে সামাজিক ও আইনি বিচার থেকে ঘটনাটি বঞ্চিত হয়।
এলাকাবাসী ও সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন—এভাবে কি সমাজ চলবে?
“যদি বিয়ে হয়ে থাকে, তাহলে কাগজপত্র থাকবে। আর না থাকলে এটি অবৈধ সংসার। সেক্ষেত্রে এটি ধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সমাজ সমাজের গতিতে, আর আইন আইনের গতিতে চলবে,” —এমনটাই বলছেন অনেকে।
ঘটনাটি ঘিরে মানবাধিকার সংস্থার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রামবাসী।
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে, পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষের অনুরোধের ভিত্তিতে ঘটনাটি প্রকাশ করা হলো।
Leave a Reply