মেহেদী হাসান মুরাদ –
মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে—সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে, তার অনেকগুলোর অবস্থান নির্ধারণে অনিয়ম রয়েছে। একাধিক গ্রামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা টিউবওয়েল স্থাপন করেছেন এমন সব জায়গায়, যেখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত খুব কম, অথবা স্থাপন করা হয়েছে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ির আঙিনায়। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে—স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে জনগণের চাহিদা উপেক্ষিত হয়েছে।
ফলে টিউবওয়েলগুলো অনেক জায়গায় পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়। কোথাও কলের হাতল বাসায় নিয়ে রাখা হয়েছে, কোথাও ভেঙে গেছে, আবার কোথাও টিউবওয়েলের মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে দিনের পর দিন। নেই কোনো রক্ষণাবেক্ষণ, নেই কোনো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ।
উল্লেখ্য, এসব টিউবওয়েল স্থাপনের মূল দায়িত্বে রয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (DPHE), যা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরই সাধারণত ইউনিয়ন পরিষদ বা স্থানীয় প্রশাসনের সুপারিশের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় এই টিউবওয়েল বসিয়ে থাকে। কিন্তু সরবরাহের পর আর কোনো নজরদারি থাকে না বললেই চলে।
এখন প্রশ্ন—টিউবওয়েল সরবরাহের পর এর সঠিক ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ, এবং পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব কে নেবে?
জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত কোটি টাকার সরকারি সম্পদ কীভাবে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে, তা দেখার মতো কেউ কি নেই?
স্থানীয় পর্যায়ে মনিটরিং ব্যবস্থার ঘাটতি এবং জবাবদিহিতার অভাব এই সমস্যা আরো জটিল করে তুলছে।
জনগণের টাকায় করা এই উন্নয়ন কার্যক্রম যেন প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছায়—সেটিই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
সুতরাং, আজ সময় এসেছে এসব প্রশ্ন তোলার—
কাদের দায়ে পড়ে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ?
এই ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা দূর করতে আমরা কী করবো?
Leave a Reply