তারই অংশ হিসেবে তারা শেরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুল, বাজার ও জনসমাগম বেশি এমন স্থানে নিজেদের হাতে তৈরি বস্তার ডাস্টবিন স্থাপন করেছে। পাশাপাশি, স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানা প্রচারণা চালিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য। এই দূষণ শুধু মাটি ও পানি নয়, প্রাণীজগতের জন্যও চরম হুমকি। কিন্তু এসব শিশু-কিশোররা থেমে নেই। তারা বুঝতে পেরেছে, নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে হলে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
শেরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তারা প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সচেতনতামূলক বক্তৃতা দেয়, লিফলেট বিতরণ করে এবং মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলে প্লাস্টিক বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করে।
ঘাসফুল শিশু ফোরামের সদস্যরা বলেন—
“আমাদের চারপাশের পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই, সবাই সচেতন হোক এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশের জন্য ভালো কিছু করুক।”
শিশুদের এমন উদ্যোগে স্থানীয় জনগণের মাঝেও ব্যাপক সাড়া পড়েছে। দোকানদার, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ তাদের কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে এই উদ্যোগকে আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
শেরপুর ইউনিয়নের এক স্কুলশিক্ষক বলেন—
“শিশুরা নিজেরাই যদি এমন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে, তাহলে বড়রা কেন পারবে না? আমরা সবাই মিলে প্লাস্টিক দূষণ রোধে কাজ করলে খুব দ্রুত এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারবো।”
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। অথচ আমাদের দেশেও প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে, যা সঠিকভাবে ব্যবস্থাপিত না হলে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। কিন্তু নান্দাইলের শিশুরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা পুরো সমাজের জন্য একটি শিক্ষা।
শিশুদের এ উদ্যোগ যদি আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে প্লাস্টিক দূষণ রোধ করা সম্ভব। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন। প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এমন ছোট ছোট উদ্যোগই ভবিষ্যতে বড় পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, সচেতনতা ও সদিচ্ছা থাকলে পরিবেশ রক্ষায় যেকোনো বয়সের মানুষ ভূমিকা রাখতে পারে। শিশুরা দেখিয়ে দিয়েছে, আমরাও পারি— প্লাস্টিক দূষণের হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনতে!
Leave a Reply