সাকিব আল হাসান – দিনাজপুর
“একুশ মানে মাথা নত না করা, একুশ মানে গৌরব।” এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পিএলসি শিশু ফোরামের অন্তর্ভুক্ত ২২টি উপজেলার শিশু ফোরামের সদস্যরা নিজেদের উদ্যোগে নানা আয়োজনে দিনটি পালন করেছে। ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন ছিল ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল।
চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
শিশুরা নিজ নিজ এলাকায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। শহীদ মিনার, ২১ ফেব্রুয়ারির শহীদদের আত্মত্যাগ ও বাংলা ভাষার মর্যাদা চিত্রকলায় তুলে ধরা হয়।
কবিতা আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শিশুরা একুশের চেতনা প্রকাশ করে। দেশাত্মবোধক গান ও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী কবিতার মাধ্যমে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন
শিশু ফোরামের সদস্যরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। কিছু স্থানে মোমবাতি প্রজ্বালন ও নীরবতা পালন করা হয়, যেখানে শিশুরা ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে।
রচনা প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা
“আমার মাতৃভাষা, আমার অহংকার”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শিশুদের অংশগ্রহণে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে শিশুরা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, বাংলা ভাষার মর্যাদা এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাতৃভাষার গুরুত্ব তুলে ধরে।
আলোচনা সভায় শিশু ফোরামের সদস্যরা ভাষা আন্দোলনের পটভূমি, বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি এবং নতুন প্রজন্মের দায়িত্ব নিয়ে মতবিনিময় করে।
পথনাটক ও একুশের শপথ
কিছু স্থানে পথনাটকের আয়োজন করা হয়, যেখানে ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক দৃশ্যপট অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। নাটকের মাধ্যমে শিশুরা ভাষা আন্দোলনের সংগ্রাম ও বিজয়কে জীবন্ত করে তোলে।
শিশুরা “বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করবো, মাতৃভাষাকে ভালোবাসবো” শপথ নিয়ে ভাষার প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
শিশুদের অংশগ্রহণ ও সাড়া
এ আয়োজনের মাধ্যমে শিশুরা ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করে। তারা নিজেদের অনুভূতি চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও আলোচনার মাধ্যমে প্রকাশ করে।
পিএলসি শিশু ফোরামের এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একুশের চেতনা আরও গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
“বাংলা ভাষা আমাদের গর্ব, বাংলা ভাষা আমাদের পরিচয়। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমরা সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ!”
এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার শপথ নিয়েছে, যা ভবিষ্যতে ভাষার প্রতি ভালোবাসা আরও গভীর করবে।
Leave a Reply