মেহেদী হাসান মুরাদ -মিঠাপুকুর, রংপুর |
“শিক্ষাই আলো, শিক্ষাই ভবিষ্যৎ”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী ও উপহার বিতরণ করেছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মিঠাপুকুর কেন্দ্রীয় বেণুবন বৌদ্ধ বিহার চত্বরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শতাধিক শিক্ষার্থীকে খাতা, কলম, ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা সামগ্রী তুলে দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিঠাপুকুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ মিঠাপুকুর এপির ম্যানেজার সুজিত কস্তা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় শিক্ষাবিদ, অভিভাবক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলা এবং তাদের পড়াশোনার পথে যেকোনো বাধা দূর করা। আয়োজকরা জানান, শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিতভাবে নেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দের ঝলক। তাদের মধ্যে একজন, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রিমা আক্তার বলে, “আমার বাবা একজন কৃষক। বই-খাতা কেনার সামর্থ্য সবসময় থাকে না। কিন্তু আজ আমি নতুন খাতা-কলম পেয়েছি, এটা আমার জন্য খুব বড় পাওয়া।”
অপরদিকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাসেল জানায়, “আমার স্বপ্ন একজন শিক্ষক হওয়া। কিন্তু পড়াশোনার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। আজ যে উপহার পেলাম, তা আমার পড়াশোনার অনেক উপকারে আসবে।”
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে শিশু অধিকার, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নিরাপদ পানি, জীবিকায়ন ও শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ তারই একটি অংশ।
এই বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ মিঠাপুকুর এপির ম্যানেজার সুজিত কস্তা বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা যেন ঝরে না পড়ে, সেজন্য আমরা নিয়মিত কাজ করছি। ভবিষ্যতে আমাদের এ কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে।”
শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারাও এ ধরনের উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। কারণ, একটি শিক্ষিত সমাজই পারে দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে।
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের এই উদ্যোগ শুধু শিক্ষা সামগ্রী বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি শিশুদের ভবিষ্যতের প্রতি একটি বিনিয়োগ। যারা হয়তো দারিদ্র্যের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সংকটে পড়ে, তাদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ হতে পারে একটি নতুন আশার আলো। শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এ ধরনের উদ্যোগ আরও সম্প্রসারিত হবে—এমনটাই প্রত্যাশা সমাজের সব মহলের।
Leave a Reply