রায়হান কবির প্রধান – মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শুকুরেরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে শুকুরেরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, শুকুরেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও শুকুরেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ পথচারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
প্রায় ৩০ বছরের পুরনো এ হেরিংবোন রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফজলুল হক মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অন্যান্য দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মোসলেমবাজার থেকে দর্শনাগামী রাস্তাটির সংযোগস্থলে অবস্থিত শুকুরেরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার যাতায়াতের প্রধান হেরিংবোন রাস্তা হঠাৎ করে মাটি ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল হাকিম এ রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। তার দাবি, এটি তার পৈতৃক সম্পত্তি।
শিক্ষার্থীরা জানায়, হঠাৎ রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন এক মাইল ঘুরে মাদ্রাসায় যেতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে সাইকেল কাঁধে নিয়ে হাঁটছে। তারা জানান, এটি চরম অন্যায় এবং তারা প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, “১৯৭৪ সাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা ব্যবহার করছে। কিন্তু হঠাৎ করে আব্দুল হাকিম রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও উল্টো গালিগালাজ করেছেন।”
অভিযুক্ত আব্দুল হাকিম বলেন, “জায়গাটি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। তাই মাটি ফেলেছি।” তার ছোট ভাই, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম লেলিন বলেন, “আমিই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারি। ওইখানে আগে গর্ত ছিল, আওয়ামী লীগের টাকায় ভরাট করেছি। নিজের জায়গায় মাটি ফেলেছি—সমস্যা কী?” শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাস্তা বন্ধ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভঙ্গিতে বলেন, “তাতে কী হয়েছে? দেখা যাক, কে কী করতে পারে।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম মন্ডল বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাস্তা বন্ধ করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।”
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
Leave a Reply