মেহেদী হাসান মুরাদ -
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার অন্যতম ব্যস্ত হাট শঠিবাড়ী। এই বাজারটি বৃহৎ বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো মানুষ কেনাকাটা করতে আসেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারের ভেতরে গালামাল ব্যবসায়ীদের দখলদারিত্ব এবং আশপাশের ফুটপাত ও সড়কে হকারদের অবৈধ দখলের কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
বাজারে দখলদারিত্বের দৌরাত্ম্য
বাজারের অনেক ব্যবসায়ী তাদের দোকানের নির্ধারিত সীমানার বাইরে পণ্য মজুদ করে রাখছেন, ফলে চলাচলের সরু গলিগুলো একেবারে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, বাজারের প্রধান প্রবেশপথ ও হাঁটার পথগুলোতে মালামাল স্তূপ করে রাখায় সাধারণ পথচারীদের স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা কঠিন হয়ে গেছে।
জনদুর্ভোগের চিত্র
বাজারের সরু গলিগুলো মালামালের স্তূপে বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে।
ক্রেতাদের পাশাপাশি সাধারণ পথচারীরাও বাধ্য হয়ে মূল সড়কে নেমে হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়ছেন।
বাজারের ব্যস্ত সময়ে যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে, যা ব্যবসায়িক কার্যক্রমসহ জরুরি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, "বাজারে শৃঙ্খলা নেই বললেই চলে। কিছু গালামাল ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে পুরো এলাকার মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলছেন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়বে।"
সড়কে হকারদের দৌরাত্ম্য, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে
শঠিবাড়ী হাটের পাশ দিয়ে চলা রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে বর্তমানে ছয় লেনের কাজ চলছে। ফলে মূল সড়কের ধারে পথচারীদের হাঁটার জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে। এর ওপর মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে ভীড় জমাচ্ছেন হকাররা। মহাসড়কের পাশে দোকান বসানো এবং ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করায় পথচারীদের মূল সড়কে নেমে হাঁটতে হচ্ছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
একজন স্থানীয় পথচারী বলেন, "আগে বাজারের মধ্যে দিয়ে হাঁটা যেত, এখন সেটাও বন্ধ। সড়কের ধারে দোকান বসানোয় আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে, এতে প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।"
কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি
শঠিবাড়ী হাটের সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যাতে অবিলম্বে বাজারের দখলদারিত্ব দূর করা হয়। বাজার বণিক সমিতি, গালামাল ব্যবসায়ী সমিতি ও সড়ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা জরুরি।
এই অব্যবস্থাপনা চলতে থাকলে দুর্ঘটনার মাত্রা আরও বাড়বে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। শঠিবাড়ীর মতো গুরুত্বপূর্ণ হাট-বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত মনিটরিং বাড়ানো ও দখলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি।