সাকিব আল হাসান
১৬ ফেব্রুয়ারি রোজ রবিবার ঠাকুরগাঁও জেলার মুন্সিপাড়া এলাকায় রজনীগন্ধা শিশু ফোরাম এর উদ্যোগে একটি বিশেষ পরিদর্শন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ফোরামের সদস্যরা এলাকার সকল শিশুদের বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং এই পরিদর্শনের মাধ্যমে তারা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন—শিশুদের শারীরিক সুস্থতা, লেখাপড়ার অগ্রগতি এবং জন্ম নিবন্ধন।
শিশুদের শারীরিক সুস্থতা
পরিদর্শনের প্রথম উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা। ফোরামের সদস্যরা শিশুদের স্বাস্থ্য যাচাই করার জন্য তাদের শারীরিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করেন এবং কোন শিশুর অসুস্থতা বা স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। ফোরামের সদস্যরা জানিয়েছেন, শীতকালে বিশেষ করে অনেক শিশু ঠাণ্ডা জনিত অসুস্থতায় ভোগে, যার কারণে তাদের শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। সদস্যরা স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করবেন।
শিশুদের লেখাপড়ার অবস্থা
দ্বিতীয়ত, ফোরামের সদস্যরা শিশুদের লেখাপড়ার অবস্থা যাচাই করেছেন। তারা জানেন যে, অনেক সময় অর্থনৈতিক দুর্বলতা বা পারিবারিক সমস্যার কারণে শিশুদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই, এই পরিদর্শন অভিযানটি লেখাপড়ার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে পরিচালিত হয়েছে। সদস্যরা প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে নিশ্চিত করেছেন যে, শিশুরা নিয়মিতভাবে স্কুলে যাচ্ছে এবং তারা যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে, সেখানে তাদের শিক্ষার পরিবেশ কেমন। এছাড়াও, সদস্যরা অভিভাবকদের অনুপ্রাণিত করেছেন যাতে তারা শিশুদের শিক্ষার প্রতি আরো মনোযোগী হন।
শিশুদের জন্ম নিবন্ধন
তৃতীয়ত, ফোরামের সদস্যরা শিশুদের জন্ম নিবন্ধন চেক করেছেন। জন্ম নিবন্ধন একটি মৌলিক অধিকার, যা না থাকলে শিশুদের বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারে। সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন যে, এলাকার সকল শিশু সঠিকভাবে নিবন্ধিত আছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র পূর্ণ রয়েছে। যদি কোন শিশু জন্ম নিবন্ধন থেকে বঞ্চিত থাকে, তবে ফোরাম সদস্যরা তাদের আইনগত সহায়তা ও তথ্য প্রদান করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেবেন।
ফোরামের মানবিক উদ্দেশ্য
ফোরামের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা এই পরিদর্শন অভিযানটি চালিয়ে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক উন্নতির পাশাপাশি তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে চান। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, এলাকার সকল শিশু সুস্থভাবে বেড়ে উঠুক, সুন্দরভাবে লেখাপড়া করুক এবং ভবিষ্যতে নিজেরা আত্মনির্ভরশীল হতে সক্ষম হোক।
এলাকার অভিভাবকরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং তাদের সন্তানের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য ফোরামের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তারা মনে করছেন, এই ধরনের উদ্যোগ সমাজে আরো ভালো পরিবর্তন আনবে এবং সকল শিশুর মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করবে।
ফোরাম সদস্যরা জানিয়েছেন, এই পরিদর্শন কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চালিয়ে যেতে তারা পরিকল্পনা করছেন এবং আরও বেশি শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করবেন।