মেহেদী হাসান মুরাদ,রংপুর
সরকারি বরাদ্দের দীর্ঘসূত্রিতা ও চরম জনদুর্ভোগের মুখে নিজেদের অর্থায়নেই রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিলেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৩ নং গোপালপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর মন্ডলপাড়ার এলাকাবাসী। দীর্ঘদিনের অযত্নে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়া রেকর্ডি রাস্তাটি এখন এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নতুন রূপ পাচ্ছে।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে শিক্ষার্থী, বয়স্ক মানুষ এবং কৃষিপণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি হচ্ছিল। বারবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় তারা নিজেরাই এই মহৎ উদ্যোগ নেন।
বান্দেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, মোবাশ্বের রহমান বলেন, “রাস্তাটি খারাপ থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে অনেক কষ্ট হতো। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই হোঁচট খেয়ে পড়ে যেত। এখন নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা সংস্কার হওয়ায় তাদের যাতায়াত সহজ হবে।”
এলাকাবাসী সাইফুল ইসলাম বলেন, “সরকারি বরাদ্দের জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছিলাম না। নিজেদের কষ্ট হলেও এই রাস্তাটি আমাদের সবার জন্য খুব জরুরি। তাই সবাই মিলে অল্প অল্প করে টাকা তুলে কাজ শুরু করেছি। সরকারের সহযোগিতা পেলে কাজটা আরও দ্রুত এবং টেকসই করা সম্ভব হবে।”
যুব সমাজের প্রতিনিধি, রবিউল ইসলাম রুশাদ বলেন, “আমরা যুবসমাজ এই উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছি। নিজেরা কাজ করতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা প্রমাণ করে দিলাম, উন্নয়ন চাইলে কেবল সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকতে হয় না, জনগণও চাইলে পরিবর্তন আনতে পারে।”
মানবাধিকার কর্মী আশিকুর রহমান মন্ডল বলেন, “এটি একটি অসাধারণ দৃষ্টান্ত। জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার ও উন্নয়নের ব্যাপারে কতটা সচেতন। সরকারের উচিত এই ধরনের জনউদ্যোগকে উৎসাহিত করা এবং দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া।”
১৩ নং গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদ এই প্রসঙ্গে বলেন, “এলাকাবাসী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাদের এই কাজ আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যত দ্রুত সম্ভব তাদের সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করব এবং ভবিষ্যতে রাস্তাটি পাকা করার জন্য সরকারি বরাদ্দ পাওয়ার চেষ্টা করব।”
Leave a Reply