📍 মিঠাপুকুরে মানবিকতা হারাচ্ছে পরিবারিক সম্পর্ক, ষড়যন্ত্রের শিকার ব্র্যাককর্মী মেসবাহুল ইসলাম
🖋️ স্টাফ রিপোর্টার | এমকে নিউজ | মিঠাপুকুর |
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল গ্রামে ক্যান্সার আক্রান্ত এক বৃদ্ধা মাকে কেন্দ্র করে জমি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে পারিবারিক বিরোধ। আর এই বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হয়েছে এক ব্র্যাককর্মীকে—যিনি নিজের অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সম্প্রতি এমকে নিউজ ও দৈনিক সময়ের কাগজের এক যৌথ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যান্সার আক্রান্ত আছিয়া বেওয়া তার তিন ছেলেকে সমানভাবে ১৯ শতাংশ করে জমি হস্তান্তর করেন স্বেচ্ছায় ও সচেতনভাবে। এরপর থেকেই শুরু হয় পারিবারিক টানাপোড়েন।
অভিযোগ ওঠে, আছিয়ার ছোট ছেলে মেসবাহুল ইসলাম, যিনি ব্র্যাকে কর্মরত, তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তারই ভাইয়েরা। অথচ তদন্তে প্রমাণ মেলে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
🔎 তদন্তে যা পাওয়া গেছে:
জমির দলিল আইনগতভাবে সঠিক এবং স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়েছে।
থানার অভিযোগে জমির বিষয়টি উহ্য রাখা হয়েছে।
নির্যাতনের কোনো প্রমাণ (মেডিকেল, ভিডিও, সাক্ষ্য) নেই।
২২ এপ্রিল, মেসবাহুল ইসলামের আপন দুই ভাই, ভাতিজা ও তাদের স্ত্রী মিলে তাকে চ্যাং-দোলা করে পা বেঁধে ভাই আনোয়ারুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যান এবং জোরপূর্বক ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে আপসনামায় স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করেন।
২১ মে এক অজ্ঞাত নম্বর (09638871183) থেকে নিজেকে ব্র্যাক HR পরিচয় দিয়ে মেসবাহুলকে চাকরি হারানোর হুমকি দেওয়া হয়।
মেসবাহুলকে তার ভাইয়েরা কুড়িগ্রামে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করাতে বাধ্য করেন।
📞 ব্র্যাক লিগাল এইডের মন্তব্য:
ব্র্যাকের কুড়িগ্রাম শাখার লিগাল এইড কর্মকর্তা রাশেদ নিশ্চিত করেছেন—এই ঘটনায় ব্র্যাক কোনোভাবে সম্পৃক্ত নয়। বরং বাদীপক্ষ কৌশলে ব্র্যাকের নাম ব্যবহার করে ঘটনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে।
🏥 রোগীর মেডিকেল রিপোর্ট কী বলছে?
আছিয়া বেওয়ার সর্বশেষ প্রেসক্রিপশন (তারিখ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) অনুযায়ী, মুখে ঘা থাকায় বায়োপসি ও হিস্টোপ্যাথলজি টেস্টের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে রিপোর্টে ক্যান্সার নির্ধারিত হয়নি। অর্থাৎ, ‘ক্যান্সার আক্রান্ত মা’—এই কথাটি পুরোপুরি নিশ্চিত নয়, যা অভিযোগের মূল ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
📣 প্রতিবেশীর মন্তব্যে কী উঠে এল?
স্থানীয় বাসিন্দা ও একজন সাবেক ইউপি সদস্য বলেন, “মা-ছেলে একসাথে থাকত, মেসবাহুলই দেখভাল করত। এখন এ বিষয়টি প্রতিহিংসামূলক রূপ নিচ্ছে।”
✅ তদন্ত প্রতিবেদন থেকে সুপারিশ:
1. নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন
2. মেসবাহুল ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত
3. হুমকি দানকারী নম্বর শনাক্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা
4. মিথ্যা অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা
5. রোগীর সঠিক চিকিৎসা ও সুরক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
📌 সারকথা:
নিজ মায়ের চিকিৎসায় নিয়োজিত এক ব্র্যাককর্মীর বিরুদ্ধে তারই ভাইদের মিথ্যা অভিযোগ, মানসিক চাপ, চাকরি হারানোর ভয় দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক ও মানবিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয়। বিষয়টি ব্র্যাকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করে।
🖊️ প্রতিবেদন প্রণয়ন:
মোঃ মেহেদী হাসান মুরাদ
জেলা প্রতিনিধি – দৈনিক সময়ের কাগজ
প্রকাশক – এম.কে. নিউজ
সহযোগিতায়:
আশিকুর রহমান মন্ডল
সাধারণ সম্পাদক – বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, মিঠাপুকুর শাখা
Leave a Reply